বাক্‌ ১৪৭ ।। অর্ঘ্য দত্ত

 

তিন মেয়ে 

 

এত ভালো আর মন্দ দিন, আগে দেখিনি কখনো!

 

তোর ভালো হলো মন্দ আর মন্দ‌ই উত্তম,

বলেছিল নদীগন্ধা মেয়ে 

মৃদুস্বর স্নিগ্ধ তার,  বৈকালিক জলে খেলে আগুনকুহক

-- তোকে চাই, তোকে চাই, যে কোনো মূল্যে শুধু তোমাকেই চাই

না পেলে জ্বালাব তোর দুচোখের ঘুম

একাশি সপ্তাহ ধরে মর তুই, মর,  এই তুষের দহন।

 

অন্যজন বলিলেন, মিরুজিন চোখ, তুই  মিউজ নতুন 

সখ করে শেখালেন পর্ব-মাত্রা, ছন্দের প্রণয়

তাঁহারো জাগিয়াছিল আচানক সাধ

ধীবরের প্রেমজালে করিবেন ফের এক গোপন ছেদন,

-- ইচ্ছা করে আপনাকে ধ্বংস করে দিই

ভরাডুবি হোক... যেন না পান বন্দর‌। 

এই বলে ভেসে যান বহুদূর...

যেন এক বীতস্পৃহ, উদাসীন, গম্ভীর জাহাজ।

 

এলোকেশী, বড়টিপ, নয়ের দশক, না কি আরো পরে ধরেছে কলম!

ভর্তৃহীনা মধ্যরাতে তিনিও তো চকমকি শব্দ ঘষে ঘষে

এ অধম সান্নিধ্যে করেন পাবকের খোঁজ...!

 

ও তিন নিয়তি-মেয়ে, মৃগয়াভিলাষী

কোনোদিন হাত পেতেছিলে?

আমার ঘরনী বুঝি কোল থেকে দেয়নি বাদাম! 

তাই তার কপাললিখন

লিখে দিলে স্বরবৃত্তে ডাকিনীর ছাঁদে! 

 

আমার‌ও তো দোষ ছিল। দোষ ছিল, দোষ 

ছিল বড়, অহেতুক পীরিতি প্রশ্রয়

ঘরের ভিতরে থাকা ছয়কোণা ঘর

এড়াতে পারিনি আমি, পুড়িয়েছি সুখ-স্থিতি, সুর তাল লয়

 

আজকাল সারারাত জেগে বসে থাকি, ভয় পাই ...ভয়

মনে হয় ওই দূর পশ্চিমঘাট পর্বতের  মৃত্যুনীল গাছ

একদিন নেচে নেচে ঘিরে ফেলবে উঠোন আমার।

 



2 comments:

  1. পীরিতি প্রশ্রয়! কিছুই অহেতুক নয় হে! কখনো কখনো সমান্তরাল না হয়ে বিপরীতমুখী হয়! যাকগে!
    কবিতাটি ভারী সুন্দর। চমৎকার!
    শেষ লাইনে ম্যাকবেথের ছায়া আবছ্যায়া ফুটে উঠল যেন!

    ReplyDelete
  2. ...ওই দূর পশ্চিমঘাট পর্বতের মৃত্যুনীল গাছ!'

    অসামান্য চিত্রকল্প!

    ReplyDelete