বাক্‌ ১৪৭ ।। অগ্নি রায়


 

কোভিড ডায়েরি

  

 

এক

 

অ্যান্টিভাইরাল রোদ উঠে এল সামান্য হয়ে, বারান্দার টবে। ফুটে ওঠার পরই যাকে নিজের বলে জেনেছিল কণকচাঁপা। দ্রুত পৃথিবীর আয়ু পুইয়ে ঝরে যাওয়ার আগে, সে আলোর গার্গল করে যায়। ফুলের ইতিহাস জানে, বারান্দার এইসব প্রাচীন প্রবাদ

 

 

দুই

 

ছুটে যাওয়া সাইরেনের থেকে নির্ঘাত সঙ্গীত নেই, তা বুঝে নিয়েছে জাতীয় সড়ক। এই অনন্ত স্পর্ধাপতনের থেকে পালক সামান্য দূরে যে পাখি ব্যক্তিগত সংবাদের দিকে উড়ে গ্যালো, তার এসবে মন নেই। সে জানে, বহুদিন পর কেউ খোঁজ করতে এলে তার শিস-সূত্রটুকুই শুধু পাবে

 

 

তিন

 

জলের কোন আলাদা কান্ডজ্ঞান নেই। ভাসিয়ে নিয়ে চলা তার স্রোতের কাছে এসে নীতিকথার বাক্স খোলেনি কোনও ভোটে জেতা বক। তাই নুড়ি পাথর, শ্যাওলা, জিওল মাছ আর শবদেহের মধ্যে. প্রবহমানতা কোনও শ্রেণী বিচারের ধার ধারেনি  কখনও

 

 

চার

 

নিঃশ্বাসের দরে বিক্রি হয়ে গেল একটা তাজা শহর। অথচ চৈত্রের বাতাসে ম ম করছিল বীজ ও কাবাবের ঘ্রাণ। অক্সিজেন যুদ্ধ শেষে হত্যোদম বাহিনী এখন ছেড়ে ফেলছে দাগ লাগা এপ্রন। ভোটের কালির চেয়ে যে দাগ দীর্ঘস্থায়ী। এপ্রনের সেলাই যাকে ছুঁয়ে থাকে

 

 

 

পাঁচ

 

দিশির বোতল কম পড়ছে এই হাঘরে ডোম সভ্যতার। চরম আকালেও তাদের অতিকষ্টে আয়োজন করা আগুন ক্রমশই ছড়িয়ে যাচ্ছে পার্কিং স্লট, মাধবী-বাগান, ক্যাম্পাস, হাইওয়ে ছাড়িয়ে অনন্তে। তৈরি হচ্ছে ছাইয়ে তৈরি এক সপ্রতিভ নগর। বাজেট-বরাদ্দ যাকে, স্মার্ট সিটি বলে ডেকেছিল        

 

   

ছয়

 

ধুলো দিয়ে ভাত মেখে খাচ্ছে জনপদ। আনাজ-বিপণীর সবুজের পাশে বসে সে স্রেফ ফুটে যাচ্ছে বিষ গিলে। যতদুর পারে ছড়িয়ে দিচ্ছে লালা মেশানো অভিশম্পাত। তা চড়া দামে কিনে প্যাকেটবোঝাই করে, বাংকারে ফিরে যাচ্ছে অন্য ভারতবর্ষ

 

4 comments:

  1. কোভিড নিয়ে কম লোককেই লিখতে দেখছি। কবি অনেকগুলো চিত্র ধরেছেন চমৎকারভাবে। ভালো লাগল।

    ReplyDelete
  2. প্রতিটি চিত্রই স্পষ্ট ও হৃদয়স্পর্শী

    ReplyDelete
  3. ছুঁয়ে গেলো۔۔ বাস্তব ছবি

    ReplyDelete