বাক্‌ ১৪৭ ।। অনন্ত নক্ষত্রবীথি ।। চঞ্চল জানা

 


চঞ্চল জানা 

৫ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৪ ১৮ই অক্টোবর, ২০১২

বাবা: প্রবোধচন্দ্র জানা, মা:অরুণা জানা

স্ত্রী: টুম্পা গুছাইত, পুত্র: অর্ঘ্য 

 

সম্পাদিত পত্রিকা: বুদবুদ   

প্রকাশিত বই: অপ্রকাশিত চঞ্চল জানা (২০১৭) 

………………………………………………………………………………………… 

 

 কবিতা কী, কবিতা কী নয়? 

 কবিতা কী নিয়ে লেখা হয়, কী নিয়ে নয়?

 কবিতা কীভাবে লেখা হয়, কীভাবে নয়?

 

 এইসব প্রশ্ন, বহুমুখী উত্তর ও তা নিয়ে তর্ক, বিতণ্ডা থেকে দূরে কবিতার খোঁজ করেন কেউ কেউ, দেখা পান স্পর্শ করেন, কেউ কেউ কবি। 

 তাঁর চেতনা বিচ্ছিন্ন হয় তাঁর থেকে, ছড়িয়ে পড়ে, বসে ধানের শীর্ষে, ঘাসে, ফুলে, উড়ে বেড়ায়, খোঁজে ধ্বনি-শব্দ-ইমেজ-সেলফ... কবিতা... পান করে, তৃষ্ণা মেটায়, ফিরে আসে, হ্যাঁ, কবি লেখেন, তাঁর অক্ষরে ফুটে ওঠে কবিতার লিপি। এভাবেই কেউ কেউ মৌমাছি।

 তাঁর দেখা সাধারণের দৃশ্য অতিক্রম করে, তিনি অশ্রুতকে শোনেন, অজানাকে জানেন, তিনি ঘুরে বেড়ান ন্যানোমিটার থেকে লাইটইয়ার, এভাবেই কেউ কেউ চঞ্চল।

 এই ভ্রমণে কেউ কেউ সঙ্গী পেয়ে যান, শঙ্খচিল, শালিখদের। কেউ মৌমাছিদের। চঞ্চল জানা, সেই কবি মৌমাছিরা যাকে নিয়ে গেছে অক্ষরদেশের সীমানা পেরিয়ে। 

 চঞ্চল, প্রকৃতই চঞ্চল, তাঁকে আমরা বাঁধতে পারিনি । মৌমাছিদের আক্রমণ আর তারপর হাসপাতালে যেতে গিয়ে গাড়ি উল্টে  যাওয়া এমনই আশ্চর্য ঘটনাক্রম তাঁকে আমাদের থেকে দূরে নিয়ে গেছে। অথচ ওষুধ তো নাগালেই ছিল! ধরে রাখতে পারিনি তাঁকে। 

 

 পাঠক, এই কবিতাগুলি রাখা হল আপনার হাতে, আপনার পাঠ স্পর্শ করুক অকালপ্রয়াত বাঙালি কবির স্পর্ধাকে, ‘নিজেরকবিতা লেখার আকাঙ্ক্ষাকে।

                                -অনিন্দ্য রায় 

........................................................ 

 

 

 

 

পুতুল রচনা 

 

 

থাকে বই

থাকে জ্বালানি ব্যবহৃত মাছেদের কাব্যিপাঠ

ক্যালরি হরণ

রোজ-ই তল্লাশি অথবা কুঁজো

হৃদকলম চাপিয়ে চলা 

 

অমিত অক্ষর 

 

থাকে জল সেবন

রন্ধনগুলি প্রকাশ্যে হাতে হাত

 

কোমর শক্ত

থৈ থৈ ভাঙছে বায়ুশ্রমে

গিলোটিনে প্রথম আলাপ 

শত্রুভাবা বালিশে 

 

ভরযন্ত্র সরছে 

উল্লেখিত ভবনাচ দেউলের পারে

 

 

বাড়ি ঘর

 

সাদা চেয়ার     কালো চেয়ার  

 

শূন্য 

 

পৌর বাচ্চার কান্না 

গুণীতক পড়ল মেয়ে 

 

অদেখা পোশাক 

অ লেখা নাম

 

পাঁচালি 

প্রকৃত আড়ালে বানভাসি 

 

উচ্চারিত শব্দপুঞ্জে     বাছা হলো ওম্

সৃষ্টি স্থিতি বিনাশ আয়ুতে 

 

পাতা নড়ে 

পত্র নড়ে 

 

তুল তুল পুতুল রচনায় 

জল-ই ভরল না একজীবনে

 

 

 

প্রি-তাপ, ইজমহীন কাঁথা

 

 

গলি সৈকতে 

             আহা ম্যাডাম 

                           বাদামহারা

 

সন্তরণ প্রণালীতে সকল সিঁচ

 

খলবলানো মেঘে 

মোরাম বালিশ 

 

আজ ধান মাথা সরিয়ে 

গোপন মাতব্বর 

 

আজ ত্রিফলক মেশামেশি

 

 

জোড়া স্বপ্ন রন্ধনে

 

 

সাদা ডিম         লাল ডিম

লাল ডিম          সাদা ডিম

 

আড়ষ্ট 

 

রক্ত বমিতে      গফুর মিয়াঁ...

 

প্রি-তাপ, ইজমহীন কাঁথা

 

 

রোদ লিখতেই রোদ     ডাহি বারান্দা পেরোলে

 

দিনের বাতাস

 

আলো-কে আলো না ওপারের ঘাস

ভাবনায় যখন জলাক্কার 

পালিত পাখির ইজমে মনে হয়

একটি শব্দও নিজের নয়

 

বাড়ির বিপরীতে মৃত মাছের হল্লা 

 

পোড়ামাটির এস্রাজ বাজছে 

বাতাবির গন্ধ পেরিয়ে লাল ঘুম

ঘুমেরা স্বপ্ন স্বয়ম্বরা

 

অনন্ত ডানা মেলছি জলের অতলে

 

নিধুবাবুর মেয়ে তোমাকে        তোমাকে

অজানাই থাকবে                    বাসস্ট্যাণ্ডের বেঞ্চ

 

 

 

হাওয়া বদলের অ্যালবাম

 

 

শেকল সরাচ্ছে আর ভোট প্রস্তাবে

জিহ্বা পর্যন্ত পুড়ে কাঠ

আড়ালে লিঙ্গ উত্তোলন

দরজায় বিপরীতে অবৈধ চালান

দরোয়ান নিকটে থেমে লাল

 

আসলে যে-কোনও প্রস্তাব এখানে বালিশের কাঠামো

                                                    দেখে

মাপ

বাড়ির জ্যোৎস্না থেকে লালনের ছায়া পর্যন্ত

যে আতা পথ

কমিশনের আওতা এড়িয়ে বেরোতে পারছে না 

 

হাওয়া বদলের অ্যালবাম

 

৬২ 

 

শুরুতেই কিছু শব্দ রাখা হোক মথিত সরিয়ে

কিছু খড়পাতা কাগজ লহমায়

উরু বয়ঃসন্ধিভারের মধ্যঅংশ

এখানে কোন দাগ থাকে না

 দাগান্ত গোপন

 

বাড়াবাড়ি বলতে হাতের ক্রমশ শীর্ণতা পাচ্ছে 

হাঁটুজল পেরনোর বাসনায় পাড়া ছাড়ছে রোদ

 

শুরুতেই রক্ রাখার প্রয়োজন ছিল 

সরল মুখস্তের কিছু রবীন্দ্রগানও

হাত তালির প্রয়োজনে বলিষ্ঠ দুটো পা 

 

দেখ দূর্বা

পা কেমন মস্তিষ্কের অলঙ্কার 

বুক নামছে নাভির তলদেশে 

ঠোঁটের অগ্রভাগ দারুচিনির লেস

আহা দূর্বা

মধ্যরাত রোজ বাতাবি শেখাচ্ছে

আর আমাদের রাস্তা বদল

 

দিনের মতো গিঁট লাগিয়ে বাড়ছে  

 

ডট্‌ কলোনি

 

দুহাতের মধ্যবরাবর যে ব্যস্ততা

যে ঘর কোনাকুনি আকাশ অতল

দুয়ারের পর্দা টেনে প্রেম এসেছে              ডট্‌ কলোনির

                                                  জড় বুদ্ধির

 

কালির বিতানে জাগে বাস্তুচোর

যেকোনও প্রেমালাপ হত্যার উনুন পেরিয়ে 

জাবর টানে

আজকাল প্রেমের ফন্দিতে আসে শরীর বিভা

                                        পিটুইটারি

 

হন্তারক আসলে আমি এবং আমরা

                    এবং দুবার মরা ঘাম

সাদাকাগজের উলটো পৃষ্টা থেকে বাদ পড়েনি 

                               রাধের খালপাড়

                              খালপাড়ের পুঁটি

যে যে ভাবেই থাকুক মরা মানুষ বাক্য বিভায় জর্জিত

 

অবসরের পর

 

অচিরেই কিছু ধানকাটার অভ্যাস গড়ে উঠবে

 

মোমের বালিশ পেরিয়ে যে গাঢ় মুখ গ্রহপুঞ্জের দিকে

আতস চিনতে পারছি না             বাজিমাত রাস্তা চিবিয়ে 

সে আলতো রেখা সংকলন পেরচ্ছে

                    পেরচ্ছে তো পেরচ্ছে

সয়ম্বর ও সমাবর্তন পাশাপাশি কাটিয়ে জলঝিঁঝি

থাক এখন বাস্তু পরিচয়

লামাদের আড়াআড়ি বসবাস হনন তাকে চেপে

দূরবর্তী গাঙ কিনারে স্থির

সবুজ পারাবত উড়াব ভুলে নাভিমুখে

এখন নাভি ফাটিয়ে জলসখা

 

অচিরেই ধান-কাদার অভ্যাস গড়ে উঠবে

উববে সর্বনবায়তন 

                    মৃদু ঘাসে 

 

 

ফাঁকা লাইনগুলো 

 

যেভাবেই বলুন উনুন-প্রণালীর ফাঁকা লাইনগুলো কালিতেই ধুয়ে যাচ্ছিল বলে ভরিয়ে তোলার ভাবনায় জীবন আসেনি। রাস্তার দুপ্রান্তে শায়িত সাপ আসলে মেধা তাড়ানোর গল্প লাইনের উপর স্থাপিত আড্ডা আমাদের এক জন্মের দ্বিতীয় একটি বসনশালা গজিয়ে উঠেছে, শিয়রে কুয়াশা

 

এক বৃষ্টি আকাশ অতল

এক বৃষ্টি মন

সঙ্গে আছি, হাত ধরছি 

নিশ্বাস, হরতন

 

যেভাবেই ভাবুন কমিউনিকেশনের সাদা অক্ষর ভা-বাসা বিতরণের কারণে রোদ মাখছে আর ফলাফল জনিত ব্যস্ততায় চিৎ, যে আড়ত এখানে চিত্রায়িত ছিল অথবা দোলন বিষয়ে কোন সন্নিবেশিত হয় না ভাবনায় মেঘ, হিম জমে, দরজা

বিভাজন সৌকর্যে কোনও গান গোপন থাকে না। 

 

         

 

 

গহ্বর    

 

আর পারছি না

ছুঁয়ে থাকা কাদা আর জলবারান্দা পেরিয়ে পোয়াতি রাস্তা

কিলবিলিয়ে উঠছে জল ও সমকৌণিক মেঘ

                   

পোস্টমর্টেম লিখছি

বিপরীত বাতাস বাঁচিয়ে ওমপাখিরা মিশে যাচ্ছে

                                        দোলাচলে

                   

এখানে মৃত্যুর গন্ধ আসে

বায়ু নির্ধারিত সমকাম রাস্তার আড়াল থেকে

শীর্ণ ট্রিগারের

                   

অর্থাৎ যে বাড়িতে আমরা থাকতাম

অর্থাৎ কৃষ্ণের বাদামি গহ্বর

অর্থাৎ নীচু কদম্ব বৃক্ষটি

বৃক্ষই বা বলব কেন রুপোলী চাদরে মোড়া ক্ষীণ আসবাব

একটু হাতলে একটি হাত ঠেসাঠেসি

                   

লিখিত জ্যোৎস্নাটি আমার চাই বাদামি গহ্বরটিও

ঝুঁকে আসছে মৃতগাছ     

 

 

 

                 

অপ্রকাশিত 

 

৩১

 

বেলা এলে ফর্সা আসে

মোরাম ধনুকটি রাস্তার ওপর টান

লংজাম্প দিচ্ছে ত্রিতাল রমণী

হাড্ডাহাড্ডি খেলায় জিতে যাচ্ছে সাপ

মোরামের গন্ধ পাচ্ছি

                ভাসা বেগুনের

সামান্য দূরে দাঁড়িয়ে বর্ণিত খেলাগুলি

হিসেবে ফেলছি

 

কথায় কথায় কাঁটা ঘুরল

                   ব্যস্তও

ভোরবেল বাজতেই পাড়া শুনশান

উঠোন ঝাঁপিয়ে পেরোচ্ছে মৃত বেড়াল

ত্রিবর্ণ-রঞ্জিত নাভিদেশ 

                    তোমার

স্বপ্ন জমতে জমতে ফ্যাকাসে

একটি গানও শেষপর্যন্ত লাগছে না

তারা মুখোমুখি

না বলব

        বেদম ঘোরে

      নিজের মতো

           না 

 

 

অপ্রকাশিত 

 

৩৭

 

হাওয়া সরিয়ে ছৌ

ভেদেভেদ ছেড়ে মৌচাক

                   

এখানে পরাগ নির্ণয় কথা ছিল

মথ বহির্ভূত কিছু ডাকপিওন 

চোখের কালো সরিয়ে বৈভব 

 

গুম্ফা দেখব        আড়াই চাল বসিয়ে স্থির

পাতা নড়ছে

পাখি

রব শুনতে শুনতে বেহুঁশ

 

শাড়ি     সায়া     ব্লাউজ

এখন কত রং

 

হচ্ছে নাহচ্ছে না 

কাট্‌। 

 

অপ্রকাশিত 

 

৫৮

 

শক্ত একটি মলাট তৈরি হছে আজকাল

ধূসর কয়েকটি অক্ষর

পাতা ওল্টালে বাঁক ধরে দেহজ কম্পাসে

অক্ষরেরা পাশাপাশি বসলে ছবি থাকে

জীর্ণ সেসব পোস্টার

                              হাত নেই

                              পা নেই

বাম বুকের অক্ষচিহ্ন গুলি

খুবলে গেছে গৃহস্থালি উই

                   

স্বজন ধরবে বলে সারারাত্রি বসে আছি... পাশে 

                                        পাশে প্ল্যাটফর্ম 

 


3 comments:

  1. চঞ্চল,

    কি বলবো। লিখবোই বা কি। বলবো-ব্যথায় বেকুফ ডাক ছাড়ি।বলবো, রোদের শিমূল ফাটিয়ে হা হা বুকের
    গানগুলি। যা আজো তোর নিগূঢ় বিদায় রচনায় তনহা রুয়ে দেয়।আমাদের দীঘল ওড়ানো দিনগুলির গায়ে।

    এক তীব্র-কে ডেকে ওঠা মোচড়! তাহলে কি ধরা যাবে তোকে। সখানু ভ্রমণের যে আঁচবুনন আমরা জ্বালিয়ে রেখেছিলাম এক শান্ত চলার রুহ ধরে, তাহলেও কি বলা যাবে "আমরা চারজন" ছিলাম কণ্ঠীসখা।

    কতো কাশ অবকাশে সেইসব হৃ আর দয়ে মাখামাখি

    প্রেক্ষা ধরে বেড়ে ওঠা পটে কবিতাই ছিল

    শর্ত-সখা
    কবিতাই ছিল
    ছল-গান

    মনে পড়ে চঞ্চল, আমাদের ঋণ্ময় রাত্রি রং, কেমন মিশে যাচ্ছিল শব্দের সুদ বেড়ে বেড়ে।

    তোর জন্য শোকগাথা লিখিনি আমরা কেউ। বরং তোকে বয়ে বেড়িয়েছি। বুকে। স্বপ্নকান্নার ছাতিমে।

    যখন আলোরা হারা হারা পথে, আমাদের যৌথ নীরবতা, সঙ্গী হল সারাজীবন।

    দূর্বা লিখেছিল —" ভরদুপুরের বিটোভেন ঘুমিয়ে পড়েছে। তবু কে আনতে গেল ঘুম, দু'হাতে কে তুলল কাঁটাগাছ, যেন

    দূর আসছে আরো কাছের কোনো দূরে"

    তোর কি মনে পড়ে বেগম আখতার নাম্নী মহিলার
    আটাশ টাকা বারো আনায় কেনা এই গনগনি মৌজা।
    যা, আমরা মনে করতুম, আমাদের বাপ ঠাকুর্দার সম্পত্তি, নদীমাতৃক কাম্যুর জন্মস্থান। এই গর্ভিনী বাইসনের সুরকি বসে যাওয়া প্রান্তরে /ঝুলির সময়নিম বেড়ালের সঙ্গে খেলতে খেলতে আমাদের উদ্বাহু ক্ঙ্ক চোরানেশার মধ্যে মিশে রয়ে গেল এক

    ছোবলমৃন্ময় মূর্তি।

    হা' দিয়ে তার কতোটুকুই বা বোঝানো যায় বল।

    হৃদি রং ফেটে যখন গড়ায় সেই লাল।

    তাকে কি ওই দূর থেকে একটু কালচে দেখায় না।

    না আজ আর কিছু বলতে চাই না।

    শুধু অনিন্দ্যদা প্রণাম।

    তিনি আমাদের সমস্ত পাপবোধ থেকে, রেহাই দিলেন।

    অন্তর থেকে ভালোবাসা তোমায়, অনিন্দ্যদা।

    প্রণাম। প্রণাম। প্রণাম।

    কেন তিনবার 'প্রণাম' বলো তো। কেননা তিন হাবাকালা গোছের ছেলে একদিন চঞ্চলতায় আবিষ্ট হয়ে থাকতো। তারা আজ একটু আড়ালে হয়তো নিজেরাই নিজেদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার একটা সুযোগ পেল।

    ReplyDelete
  2. 'প্রকৃত আড়ালে বানভাসি'- কবিকে শ্রদ্ধা জানাই। এক স্বতন্ত্র সত্তা,স্বর, লিখনশৈলী।বারবার পড়তে হবে তাঁকে।

    ReplyDelete
  3. চঞ্চলকে চোখের সামনে দেখিনি কখনো কিন্তু মনের ভেতরে দেখেছি | যখন ওর ফোন বেজে উঠতো আর ওর পত্রিকা বুদ্বুদের জন্য লেখা চেয়েছে , যখন চঞ্চল অত্যন্ত বিনয়ী ভাবে কত গভীর সারল্যে কথা বলেছে ফোনে , তখন ওর একটা বিমূর্ত অথচ মনের গভীরে থেকে যাওয়া ছবিকে আমি দেখতে পাই | এরপর হঠাৎ সেই বজ্রাহত খবর | সেই অত্যাশ্চর্য চলে যাওয়া | আজ অনিন্দ্যর সম্পাদনায় যে সমূহ লেখাগুলো প্রকাশিত হলো , সেই লেখা আবার উস্কিত করলো ,_দমকা দিলো মনের আয়নায় এক বিনয়ী চঞ্চলতায় | ছোট ছোট শব্দ ও ধ্বনিতরঙ্গের মধ্যে দিয়ে যে কবিতার স্বাতন্ত্র যে অপর নতুনত্বকে বহুস্তরীয় বিন্যাসে কেবল নিজের মতো করে প্রকাশ করেছিল চঞ্চল ۔۔۔۔
    তাঁর অকালপ্রয়াত , মাত্র আটত্রিশ বছর জীবনেও সেই নতুন অভিযাত্রীর স্বর রয়ে গেলো অগণনীয় এক ঐতিহাসিক বাংলাকবিতার বংকানেকশনে , যেখানে প্রচারের ধামাকা নেই | নেই চিত্তচঞ্চলি চকরচঞ্চু | নেই উল্লমফন | আছে এমন এক পাথরচাপা স্বয়ংক্রিয় আলোর বৈদ্যুতিক ফুল , যা অনন্ত নিবিড় রাতের আকাশে সলমাজরীর চুমকি হয়ে জ্বলে যাচ্ছে সেই ইতিহাসে , যা অন্বেষণ ও অনুসন্ধান করতে হলে পাঠককে ভালোবাসতে হয় নতুন পথের যাত্রী হবার তীব্র ইচ্ছে নিয়ে ۔۔۔۔
    সেই অজানা অথচ ভোর রাতের শুকতারার মতো জ্বলজ্বল করে চঞ্চলেরা ۔۔۔۔
    চর্যাপদ থেকে আজও সেই নতুন পথের সান্ধ্য পথের পাঠ নিতে ইচ্ছুক দীক্ষিত পাঠকের জন্য ۔۔۔۔۔۔۔۔ প্রদীপ চক্রবর্তী

    ReplyDelete