বাক্‌ ১৪৭ ।। সমিধ গঙ্গোপাধ্যায়

 

অ্যাসাইলাম থেকে- ৪৫

এই তরুণজীব যুদ্ধ কতকাল সাতে পাঁচে যোগ দিয়ে গুণফল প্রত্যাশী পায়ের হাড়ের সঙ্গে কানের লতিন্যাতনেতে লিঙ্গের সঙ্গে মহাকাব্যিক লিঙ্গহীনতাসৎ মায়ের সঙ্গে আপন পিসিলোমের সঙ্গে পরমাণুলোম যুযুধান মুখে চোখে ব্রহ্মাণ্ডজন্মের তিন সেকেন্ড আগের উত্তেজনা এই সেই যুদ্ধ কতকাল।

হরবোলার কন্ঠে শস্ত্রের তর্জন উঁচু করে তোলা তর্জনীর মতো পালটাচ্ছে তাল মেলানো ভার তাছাড়া আন্দোলন বেশি শ্রমিকমনস্কতা পছন্দ করে না এখন তবু পরিখা গুপ্ত ফাঁদ জল্লাদের চোখের সামনে বিস্ফারিত বিদ্রোহীর বিশ্বাসঘাতকতা ইউনিকোডের কাছে একটাই দিনরাত্রি দ্বন্দ্বসমাস বাদে বিজ্ঞাপ্য করতে চায় যদিও জি-এইট বৈঠকখানায় অবাধ্যের আয়ুকাল খতম হওয়াটা বড় কঠিন সে শকাব্দ থেকেই তাই মীমাংসার কাবাবের রঙ ঠিক না জমলে ক্যাম্পফায়ার শূন্য প্রহরে আবারও মুলতুবি হবে আর অবসরে এ ওর চোখের সঙ্গে নাক, ক্যালপলের সঙ্গে ভ্যালিয়াম, অঙ্গরাজ্যের সঙ্গে শাখাপ্রদেশের গোপন বিরতিগুলো আর ততটা গোপন রাখবে না খুঁচিয়ে দগদগে মহড়াগুলি শানাবে, কবরের জখমগুলি চাগিয়ে সাবান ঘষে পরাবে নতুন পাৎলুন এমন কৌশলে যাতে ফাঁকফোকর দিয়ে তর্কের খাতিরযত্ন একইরকম থাকে সম্মাননা যতই টস্কে যাক না কেন!

আদার ব্যবসায় নেমে অজান্তে দু'চারটে জাহাজ দু'হাতে ধরা যায় ডোঙার মত এইভাবেই বিক্রি করি, ধ্রুবতারার দরকার পড়ে না তাতে ঘোড়াশাল হাতিশাল অবধি ধরা পড়ছে না কিন্তু বাড়ি ফিরলে পরিবার "কই দেখি" এগিয়ে এসে মুখের গন্ধ শোঁকে। রক্তের চলাচল নিয়ে মাথাব্যথা নেই গন্ধ বেরোনোটা জরুরী। না বেরোলেই চিত্তির। আমাদের ভেতরের ঈশ্বর লালিত সুতো ঘোরতর মাঞ্জা সহকারে আমার পুত্তলিকার মুখাগ্নি করতে থাকে-- "হতচ্ছাড়া সারাদিনে একটাও জাহাজ একাবোকা পেলি না যদি, নিদেন অন্যেরটা খুঁতো করে দিতেই পারতিস! অন্তত কারও কড়ির সঙ্গে কারও বরগার দেখা না করিয়ে অন্য পথেও তো ঘোরাতে পারতিস!"

চিৎকার জড়িয়ে ধরে সন্ধ্যার টুঁটি অত্যধিক বন্ধুভাবে আচ্ছন্ন ধোঁয়া আমাদের গিলে নেয় আর রাত্রে প্রবল কাশি পোঁটলার মত ছুড়ে মারে কাছের পিঠেই--না চাইতেই এমন মৈথুন প্রতিনিয়ত ছটফট করতে করতে নেক্রোলেপ্সিওয়ালা নেকড়ের মত ভোরের দিকে মাঠপানে ছোটে অবশ্য তখনও চাঁদের ঘুমচোখ-- চশমা পরতে না পরতেই কার কোন্ ত্যাগে কত কঠিন কোমল গতকালের ঘটনা সামান্য আধসেদ্ধ চকচকে ঠুকরে তুলতে পারলেই ত্রাণের দরে এখনও ছেড়ে দেওয়া যাবে সেই স্তনের কুঁড়ির সঙ্গে বিষাক্ত বিষাদ বা ফোঁপানির ছুঁচলো পদাতিক,কচ গ্রহ বিক্ষেপের সঙ্গে সময়োপযোগী জ্বরঠুঁটো অথবা লাঙলের ফালের সঙ্গে তেজস্ক্রিয় মজ্জার কুচি নালে ঝোলে যেন অবতারের চটকা ভাঙার তিন সেকেন্ড আগের উন্মাদনা এই সেই যুদ্ধরেসিপি।

শুধু নাম-ধাম কামিয়ে মাকুন্দ হয়ে থাকাটা যে হদ্য বোকামি, যত বড় ভাগ হবে দখল তত বেশি মূল্যবান...এ সহজ ধাঁধা বুঝতে আমাদেরও বাকি নেই আর।


8 comments:

  1. অনেক স্তর এবং অনেকবার পাঠের দাবি রাখে। অসামান্য লেখা ।

    ReplyDelete
  2. যত বড় ভাগ হবে দখল তত বেশি মূল্যবান। লোলুপ মনের এই সহজ ধাঁধা বোঝে যেকোনো মন। সত্যিই তো। দুর্দান্ত লেখা আমার ভালোবাসা জানিস।❤️

    ReplyDelete
  3. অজস্র ধন্যবাদ জানবেন।

    ReplyDelete
  4. একটির পর একটি লেয়ার ভেদ করে এ লেখা নিঃসন্দেহে একটা milestone এর দাবী রাখে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আপনার মন্তব্যে প্রাণিত হই সবসময়।

      Delete
    2. আপনার মন্তব্যে প্রাণিত হই সবসময়।

      Delete
  5. বহুস্তরীয় লেখার অনন্য নিদর্শন। আরও বহুবার পাঠ এর দাবী রাখে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আন্তরিক ধন্যবাদ নেবেন। আপনার প্রতিক্রিয়ায় ভরসা পেলাম।

      Delete